খলিল আহমদ
আজকের বাংলাদেশ -
শুধু তুমি নও , এমনটি ছিলে?
তোমাকে এবং বাংলা ভাষাকে রক্ষা করেছে
বাংলার স্বাধীনতাকামী দামাল ছেলেরা ও মুক্তিকামী মানুষ মিলে।
আমি দেখেছি আজ -
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাশে দাঁড়িয়ে ,
১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৯৫২ খ্রিস্টাব্দ
১৯৫২ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৯৫৪ , ১৯৫৬ , ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দ
একের পর এক বাংলার ছেলে দিয়েছে প্রাণ।
২৩ জুন ১৭৫৭ খ্রিস্টাব্দ মীরজাফর আলী খানের বিশ্বাসঘাতকতায়
বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব -
সিরাজ -উদ্ - দৌলা শহীদ ও পরাজয়ের পরে বাংলার স্বাধীন সূর্য ম্লান হয়ে যায় ,
ইংরেজ শোষণ করে নেয় সবকিছু দুঃখ শুধু রহে যায়।
খ্রিস্টাব্দ ১৯৪৭ , বাংলা হারায় আপন শরীরের
অংশ উড়িষ্যা , বিহার , পশ্চিম বাংলা , সেই জাতীয়তাবাদী , মৌলবাদী প্রথায়।
দাও ফিরে আমার শরীরের অংশটুকু
পশ্চিম বাংলা , উড়িষ্যা , বিহার
তাহলে পূর্ণ হবে আকাঙ্ক্ষা আমার।
শুধু তোমাকে , শুধু তোমাকে বাঁচাতে
বহু বাঙালি দিয়েছেন জীবন দান ,
হে আমার বাংলা ভাষা ও বাংলাদেশ
' ১৯৫২ খ্রিস্টাব্দের ২১ ফেব্রুয়ারি '
বুকের তাজা রক্ত দিয়ে তোমাকে রক্ষা করেছে
আমার ভাইয়েরা - রফিক , সালাম ,
জব্বার , বরকত আরও অনেক দিয়েছে আত্মদান -
সে - দিনের সে - সুরে , আত্মবিশ্বাসে ,
স্বপ্ন ছিল সেদিন পূর্ববাংলার জনগণের ,
স্বাধীন একটি দেশের , প্রত্যেক দেশপ্রেমিকের নিঃশ্বাসে নিঃশ্বাসে
এরপর দীর্ঘ ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের পর
স্বাধীন হলো - ' দেশ আমার '।
বায়ান্নের ২১ ফেব্রুয়ারি ও ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দের -
এক সাগর রক্ত ও ত্যাগ তিতিক্ষার ফলে
১৬ ডিসেম্বর বাংলার রক্তিম আকাশে
পূর্ব দিগন্তে উদিত হলো নতুন সূর্য
জন্ম হলো বাংলা নামের একটি
স্বাধীন রাষ্ট্র , ২২৪ বছর পর , শুধুমাত্র
১৯৫২' র 'একুশে ' ফেব্রুয়ারির প্রেরণায় ,
ও উদ্দীপনায়
স্বাধীন আমি , কথা বলি বাংলায়
'বাংলা ভাষা' মোর মাতার ,
তাই তো বলি শির উঁচু করে
'একুশ' আমার অহংকার।
(রচনাকাল: ২৮ জানুয়ারি ১৯৮৯খ্রি., শেখ মুজিব হল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়)
(বর্ণমালার বাংলাদেশ কাব্যগ্রন্থ থেকে)
Commentbox