খলিল আহমদ
স্বাগতম , আর্যজাতি শুভেচ্ছা তোমাকে
দিয়েছো সুন্দর একটা মায়ের ভাষা আমাকে।
এসেছিলে তুমি খ্রিস্টীয় মধ্যবর্তী সময়ের কালে
এ উপমহাদেশে বরেন্দ্র , ভঙ্গভূমি তথা
আজকের বাংলাদেশে ,
সোনামাখা, উর্বর , উন্নত সোনার দেশে।
"বাংলা ভাষা'র ইন্দু - ইরানী ভাষাগুচ্ছের পরিণতি মাত্র"
বরেন্দ্রভূমি তথা বঙ্গে আগত
প্রাচীন আর্যজাতির 'সন্দোশ ভাষা' ,
ইহা পরিবর্তিত হয় অঞ্চলভেদে ,
মিলিত হয় , মিশ্রিত হয় , পুরানো
অনার্যজাতির ভাষার সাথে ,
ইহারাই হলো বাংলা ভাষা।
সন্দোশ ভাষার পরিশোধিত রূপ হলো - সংস্কৃত ভাষা ,
পণ্ডিতজনার ব্যবহার্য ভাষা , কেতাবী ভাষা ,
মিটাইলো পণ্ডিতদের আশা
কিন্তু জনসমাজে , ভাষা রইল কথ্য অসংস্কৃত
ইহার প্রকৃত নাম প্রাকৃত ভাষা।
প্রাচ্য অঞ্চলে ধারণ করলে আবার দু'টি রূপ
পশ্চিম প্রাচ্য ও পূর্ব প্রাচ্য তুমি - অপরূপ।
মাগধী অপভ্রংশের রূপ পরিবর্তনে
খ্রিস্টীয় দশম শতাব্দীর দিকে , তোমার জন্ম
হলো বাংলা ভাষা।
তারপর তুমি ভাগ হও তিন যুগে
আর্যি , মধ্য ও আধুনিক যুগে ,
আর্যি'র নিদর্শন মিলে বৌদ্ধগান ও দোহা নামক গ্রন্থে।
শ্রীকৃষ্ণের কীর্তন , গোপীচাদের গীতিকা
রামায়ণ ভাগবতের অনুবাদ , ইত্যাদি , মধ্যযুগে।
আধুনিক যুগে ভাষার নিদর্শন মিলে ,
বঙ্কিম , রবীন্দ্র , নজরুল প্রভৃতি সাহিত্য
শিল্পীর অসাধারণ প্রতিভা করেছে
আধুনিক বাংলা ভাষাকে
অসাধারণ মর্যাদা ও গৌরব মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত ,
তুমি থাকবে চির সম্মানে - অধিষ্ঠিত।
চির সম্মানে , গৌরব মহিমায়
সুখে দুঃখে হৃদয়ের স্পন্দনে ,
মোর প্রত্যেক ভাবমূর্তির আকাঙ্ক্ষায়।
বঙ্কিম বাবু , রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও কাজী নজরুল ইসলাম
প্রভৃতি সাহিত্য শিল্পীর অসাধারণ প্রতিভা ,
আজকের 'বাংলা ভাষা' যাঁর গৌরব হবে না ম্লান ,
তুমি প্রোজ্জ্বল , উজ্জ্বল রাত ও দিবা।
(রচনাকাল: ২০ নভেম্বর ২০২০খ্রি., বিলাত)
(বর্ণমালার বাংলাদেশ কাব্যগ্রন্থ থেকে)
Commentbox